বুধবার যুক্তরাজ্য ভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (ইআইইউ) প্রকাশিত প্রতিবেদনে ‘গণতান্ত্রিক’ কিংবা ‘ত্রুটিপূর্ণ গণতান্ত্রিক’ দেশের তালিকায় বাংলাদেশের নাম নেই।
ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট তাদের প্রতিবেদন তৈরি করে নির্বাচনী ব্যবস্থা ও বহুদলীয় অবস্থান, নাগরিক অধিকার, সরকারের সক্রিয়তা, রাজনৈতিক অংশগ্রহণকে মানদণ্ড হিসেবে গ্রহণ করে। প্রত্যেকটি মানদণ্ডকে ০ থেকে ১০ স্কোরের মধ্যে হিসেব করে গড় করা হয়।
প্রাপ্ত স্কোরের ভিত্তিতে দেশগুলোকে চারটি ক্যাটেগরিকে ভাগ করা হয় – স্বৈরতন্ত্র (০-৪), হাইব্রিড রেজিম (৫-৬), ত্রুটিপূর্ণ গণতন্ত্র (৭-৮) এবং পূর্ণ গণতন্ত্র (৯-১০)।
সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে ১৬৭টি দেশের মধ্যে মাত্র ২০টি দেশ গণতন্ত্রের তালিকায়, ৫৫টি দেশ ত্রুটিপূর্ণ গণতান্ত্রিক দেশের তালিকায়, ৩৯টি দেশ হাইব্রিড রেজিমের তালিকায় এবং ৫৩টি দেশ স্বৈরতান্ত্রিক দেশের তালিকায় আছে। বাংলাদেশ ৫.৫৭ স্কোর পেয়ে ‘হাইব্রিড রেজিম’ তালিকায় রয়েছে।
জেনে নেওয়া যাক ‘হাইব্রিড রেজিম’ কী:
হাইব্রিড রেজিম-এর তালিকায় সেই দেশগুলো থাকে, যেখানে নির্বাচনে বেশ অনিয়মের ঘটনা ঘটে। যা প্রকৃতপক্ষে নির্বাচনের সুষ্ঠুতা ও নিরপেক্ষতায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। এছাড়া বিরোধী দল এবং প্রার্থী সরকারের চাপ থাকাটা একটা সাধারণ ঘটনা। দেশে রাজনৈতিক সংস্কৃতি, সরকারের সক্রিয়তা এবং রাজনৈতিক অংশগ্রহণের বিষয়ে মারাত্মক দুর্বলতা দেখা যায়। দুর্নীতির বিস্তার প্রায় সর্বত্র এবং আইনের শাসন খুবই দুর্বল। সিভিল সোসাইটি দুর্বল। সাংবাদিকরা সেখানে হয়রানি ও চাপের মুখে থাকে এবং বিচার ব্যবস্থাও স্বাধীন নয়।
এই তালিকায় বাংলাদেশে:
- ২০০৬ সালে গণতন্ত্র সূচকে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ স্কোর ছিল ৬.১১ (ত্রুটিপূর্ণ গণতন্ত্র)।
- ২০০৮ সাল থেকে দেশটি ‘হাইব্রিড রেজিম’-এর তালিকায় আছে।
- ২০১৭ সালে বাংলাদেশের স্কোর ছিল ৫.৪৩। এটাই ছিল বাংলাদেশের সবচেয়ে বাজে অবস্থান।
উল্লেখ্য, সর্বোচ্চ স্কোর ৯.৮৭ পেয়ে গণতন্ত্র সূচকে সবচেয়ে উপরের অবস্থানে আছে নরওয়ে। প্রতিবেদনে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভারত ও শ্রীলঙ্কায় ‘ত্রুটিপূর্ণ গণতন্ত্র’ বিরাজ করছে। অন্যদিকে, বাংলাদেশ, ভুটান, নেপাল ও পাকিস্তানে ‘হাইব্রিড রেজিম’ এবং আফগানিস্তানে ‘স্বৈরতন্ত্র” সরকার ব্যবস্থা আছে বলে উল্লেখ আছে। তবে মাত্র ১.০৮ স্কোর নিয়ে উত্তর কোরিয়ার অবস্থান সবার নীচে।