বৃহস্পতিবার (১০ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি হলে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ‘রাজচালাকি’ বলে আখ্যা দিয়েছেন নির্বাচনে প্রধান বিরোধী জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন।
ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘সবাই ক্ষমতা চায়, ক্ষমতায় থাকতে চায়। পাঁচ বছর আগে ২০১৪ সালে নির্বাচন হয়েছিল। তারপর আবার নির্বাচন এলো। আবার প্রহসন দেখতে হলো। এগুলো তো প্রয়োজন নেই। দেশের মানুষ তো এই খেলার মধ্যে কোনো ভূমিকা রাখতে চায় না।’
তিনি বলেন, ‘এই অনুষ্ঠানগুলো (নির্বাচন) হবে সুন্দরভাবে। সবাইকে জানিয়ে আমরা একটা ইলেকশন দেব, তারিখ নির্দিষ্ট হবে, মানুষ আসবে, সরাসরি ভোট দেবে। আর এটাকে অন্য কোনো কায়দায় নিলে দেশে স্থিতিশীলতা আসে না, নির্বাচনে বৈধতা আসে না, ক্ষমতা কাউকে বুঝিয়ে দিতেও পারে না। এই ধরনের অনুষ্ঠান, চালাকির অনুষ্ঠান।’
তিনি আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু এটাকে বলতেন রাজচালাকি। আমরা রাজনীতি থেকে সরে যাচ্ছি রাজচালাকিতে। আমি বলব যে, ৩০ ডিসেম্বর হচ্ছে সেই রাজচালাকির একটা উদাহরণ। রাজচালাকি থেকে বিরত থাকুন। জনগণের সামনে সব কিছু তুলে ধরুন। সংবিধানকে মেনে সংবিধান অনুযায়ী আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে যা করার তাই করুন।’
তিনি বলেন, ‘সত্যি খুব দুঃখ লাগে। ৩০ ডিসেম্বর যে ঘটনাটা— ৪৮ বছর পর এটা দেখতে হচ্ছে। এটা আমি বিশ্বাস করতে পারছি না। এটা তো হবার কথা না। ৪৮ বছর পরে এটা কেন হবে? আমি তো সরলভাবে বলেছি সকালে সকালে গিয়ে ভোট দেবেন। কিন্তু ঘটনা তো রাতেই ঘটে গেছে।’
ড. কামাল হোসেন আরো বলেন, ‘এটা আইনানুগভাবে মেনে নেওয়া যায় না। সংবিধান অনুযায়ী এটা হয় না। সংবিধান মানতে সবাই বাধ্য। সংবিধানের উর্ধ্বে কেউ না। এইগুলো সংকট কেন সৃষ্টি হচ্ছে। এটা যদি করতে হয়, জনগণের মতামত নিয়ে করতে হয়। জনগণ হচ্ছে রাষ্ট্রের মালিক। সংবিধান তা উল্লেখ আছে। বঙ্গবন্ধু স্বাক্ষরিত দলিলে পরিষ্কার বলা আছে, এ দেশের মালিক জনগণ। জনগণ মালিক হলে তাদের নির্বাচিত প্রনিনিধি ছাড়া অন্য কেউ কিছু করতে পারে না।’
অলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদ মোস্তফা মহসীন মন্টু, গণফোরাম নেতা অধ্যাপক আবু সাঈদ, মোকাব্বের খানসহ অন্যরা।