শুক্রবার পশ্চিমবঙ্গের বারাসতের কাছারি ময়দানে ২৩ তম রাজ্য যাত্রা উৎসবের সূচনা করে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আজ দেশে গণতন্ত্র নেই। মায়ের সম্মান নেই। দেশে অন্য মানুষদের সম্মান নেই।
মমতা বলেন, ‘এক ধর্মের মানুষ কী খাবে, অন্য ধর্মের মানুষ কোথায় যাবে, মা-বোনেরা কী পোশাক পরবে, কৃষকরা বেঁচে থাকবে কী না -এসব কথার কোনো জবাব নেই। এই জিনিস চলছে আজকে।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন আসছে, ভোট বাবুরা দাঁড়কাকের মতো কা-কা করে ডাকতে শুরু করেছেন। কি ডাকছে? পোস্ট অফিসের মাধ্যমে চিঠি দিয়ে বলছে, সবই নাকি ওঁরা (কেন্দ্রীয় সরকার) করেছে! তাহলে রাজ্যটা কিসের জন্য? কাঁচা কলা খাওয়ার জন্য? কেন্দ্রীয় সরকার কাজ, কেন্দ্রীয় সরকারের করা উচিত। রাজ্যের দায়িত্ব রাজ্যের কাজ করা। কেন্দ্রীয় সরকারের কাজ কী ছিল, নোট বাতিলের নাম করে টাকা লুট করা? না পাকিস্তানের নাম করে, বাংলাদেশের নাম করে নেপালের নাম করে আমেরিকা থেকে শুরু করে সবার সঙ্গে দেশের সম্পর্ক খারাপ করে দেয়া?’
মমতা বলেন, ‘আগে কখনো গান্ধীজির নাম ভুলিয়ে দেয়া যায়নি। নেতাজির নাম ভুলিয়ে দেয়া হয়নি। মনে রাখবেন এক একটা জায়গার নাম ভুলিয়ে দেয়া হচ্ছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন করে দেয়া হচ্ছে। গায়ের জোরে ‘দূরদর্শন’(সরকারি টেলিভিশন সংস্থা), বিজেপি-দর্শন হয়ে গেছে। ওখানে রোজ দেখবেন ‘মোদি কা বাত’, আর কারও কোনো ‘বাত’ নেই, অন্য সব কাত। একমাত্র রাজনীতি চলছে, আর কিছু নেই। এমনকি যারা আপনাদের কাছে হিন্দু-মুসলিমের কথা বলে, মনে হচ্ছে তারা হঠাৎ করে সব ধর্ম শিখেছে।’
তিনি বলেন, ‘গোটা ভারতে বারো হাজার কৃষক মারা গেছে। আত্মহত্যা করেছে, ব্যাঙ্কের দেনার দায়ে ডুবে আছেন তাঁরা। মনে রাখবেন, বাংলার কৃষকরা গর্বের বিষয়। আমাদের সরকারে, আমরা কৃষকদের খাজনা মওকুফ করে দিয়েছি।’
মোদি সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘নেই কাজ তো খই ভাজ। কাজের বেলায় অষ্টরম্ভা, নিজের কাজ কিচ্ছু করেনি, এখন চিঠি পাঠিয়ে বলছেন, ঘর তৈরি নাকি মোদি বাবু করেছেন! বাথরুম তৈরিও নাকি তিনি করেছেন! স্বাস্থ্য-বীমাও নাকি তিনি করেছেন! কৃষকদের তিনি বাঁচিয়েছেন! তিনি যদি সব করে থাকেন, আমরা এখানে বসে আছি কিসের জন্য? কাঁচাকলা খাওয়ার জন্য? আমাদের সরকারটা কী নির্বাচিত সরকার নয়? শিক্ষা কার অধীনে? রাজ্যের অধীনে। শিক্ষাশ্রী, কন্যাশ্রী কারা করে? সংখ্যালঘু স্কলারশিপ, স্বামী বিবেকানন্দ স্কলারশিপ কে করে? রাজ্য সরকার করে। কৃষকদের বাঁচায় কে? রাজ্য বাঁচায়।’