জইশ ই মোহাম্মদ নেতা মাসুদ আজহার প্রশ্নে পাকিস্তানের পাশে অবস্থান নিল চীন। কয়েক সপ্তাহ ধরে আলোচিত জইশ ই মোহাম্মদ নেতা মাসুদ আজহারকে তালিকাভুক্ত করতে ভারতের প্রচেষ্টার কোন দামই দিল না চীন। তাই এ বারও চীনের বাধায় জইশ ই মোহাম্মদ নেতা মাসুদ আজহারকে নিষিদ্ধ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে পারল না জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদ। মাসুদ আজহার প্রশ্নে ভারতের পাশে ছিল আমেরিকা, ফ্রান্স, রাশিয়া, ব্রিটেন-সহ বিভিন্ন রাষ্ট্র। কিন্তু চীনের বাধায় শেষ পর্যন্ত বিফলে গেল ভারতের সব প্রচেষ্টা। আর চীনকে পাশে পেয়ে আরো বেশি আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠেছে পাকিস্তান।

চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, এই বিষয়টির মীমাংসা ‘প্রত্যেকের কাছে গ্রহণযোগ্য’ হওয়া প্রয়োজন। সে দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লু কাং বলেন, ‘‘আমি আগেও বলেছি, আবারো বলছি, দায়িত্বশীল রাষ্ট্রের মতো আচরণ করবে চীন।’’
চীনের বিপরীত অবস্থানে দাঁড়িয়ে আমেরিকার পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র রবার্ট পালাডিনো জানান, ‘‘আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী হিসেবে ঘোষণা করার যে ক’টি শর্ত প্রয়োজন, তার সবক’টিই মাসুদ আজহারের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।’’
প্রস্তাবে আপত্তি জানানোর সময়সীমা শেষ হওয়ার এক ঘণ্টা আগে চীন জানায়, এই প্রস্তাব বিবেচনা করতে তাদের আরো সময় প্রয়োজন। এ নিয়ে চার বার এই উদ্যোগ আটকে দিল বেইজিং।
এক বিবৃতিতে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘‘আমরা হতাশ। এর ফলে জম্মু-কাশ্মীরের সাম্প্রতিক হামলার প্রেক্ষাপটে মাসুদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক স্তরে পদক্ষেপ করার পথ বন্ধ হয়ে গেল।’’
ভারতীয় মিডিয়ার খবরে বলা হয়, মাসুদ আজহারকে নিষিদ্ধ তালিকায় আনার এই চেষ্টা প্রথম নয়। গত দশ বছর ধরেই ভারত সরকার বিষয়টির জন্য চেষ্টা চালিয়ে আসছে নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য রাষ্ট্রগুলোর কাছে। প্রত্যেক বারই হোঁচট খেতে হচ্ছে বেইজিংয়ের আপত্তিতে। তবে এহেন চাপের মধ্যেও যে একেবারে দায়ে না পড়লে ‘সব ঋতুর মিত্র’ পাকিস্তানকে কোনো অস্বস্তিতে ফেলতে চায় না চীন, প্রস্তাব পেশ হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগেও তার ইঙ্গিত দেয়া হয়েছিল।
এই ঘটনা মোদি সরকারের জন্য অবশ্যই হতাশার। কারণ মাসুদ আজহার ইস্যু এখন ভারতের নির্বাচনী প্রচারের সবচেয়ে বড় নাম। মাসুদ আজহার নিষিদ্ধ তালিকাভুক্ত হলে পাকিস্তানকে নতুন করে কোনঠাসা করতে পারত ভারত।