কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে তেতুল দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে এক শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা ও লাশ গুম করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহত শিশু শিক্ষার্থী গজারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী।
চৌদ্দগ্রাম উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের গজারিয়া গ্রামে শনিবার এ ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ধর্ষক বাপ্পিসহ পাঁচজনকে আটক করেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গজারিয়া গ্রামের ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেনের কন্যা স্কুল ছাত্রী তাওহীদা ইসলাম ইলমাকে (৮) ধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ পাশের মরা ডাকাতিয়া নদীতে পুতে রাখে। পরবর্তীতে শিশুটির স্বজনেরা খোঁজাখুঁজি শুরু করে।
শনিবার সকালে নিহতের স্বজনদের তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ ডাকাতিয়া নদী হতে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে।
নিহতের মা হাছিনা বেগম এবং পার্শ্ববর্তী কয়েকজন প্রতিবেশীর সাথে কথা বলে জানা যায়, নিহত ইলমাকে শুক্রবার বিকেলে পাশ্ববর্তী বাড়ির জাকির হোসেনের ছেলে স্থানীয় বখাটে মাঈন উদ্দিন বাপ্পি (২০) ও একই বাড়ির আবুল কালামের ছেলে মিজানুর রহমান (১৯) তেতুলের প্রলোভন দেখিয়ে বাপ্পিদের ঘরে ডেকে নিয়ে যায়।
সেখানে তাকে পালাক্রমে ধর্ষণের পর হত্যা করে প্রথমে লাশ বাপ্পির ঘরের সিলিংয়ের উপর লুকিয়ে রাখে। পরে রাতে বাড়ির পার্শ্ববর্তী মরা ডাকাতিয়া নদীতে লাশটি কাঁথা মুড়িয়ে পানির নিচে ডুবিয়ে রাখে। এদিকে শুক্রবার রাত পর্যন্ত স্কুল ছাত্রী ইলমাকে খুঁজে না পেয়ে তার পরিবারের পক্ষ থেকে মাইকিং করে ও নিখোঁজ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে খোঁজাখুঁজি করে ব্যর্থ হয়।
এক পর্যায়ে শনিবার সকালে নিহতের মা ও এলাকাবাসী সন্দেহভাজন হিসেবে বাপ্পিকে আটক করে। আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বাপ্পি ধর্ষণ ও লাশ গুমের কথা স্বীকার করে। পরে ডাকাতিয়া নদীর পানির নিচ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। উলঙ্গ লাশটির সাথে মোড়ানো কাঁথা ও মশারি ধর্ষক বাপ্পির বলে জানা যায়। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার খবর পেয়ে এলাকায় হাজার হাজার মানুষ জড়ো হয়।
এক পর্যায়ে উত্তেজিত জনতা ধর্ষক বাপ্পির দুইটি ঘর, একটি খড়ের গাদা ও তার সহযোগি মিজানের দুইটি ঘর ভাংচুর করে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। খবর পেয়ে চৌদ্দগ্রাম থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
শনিবার বিকেলে চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল মাহফুজের সাথে কথা বলে জানা যায়, স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় মূল আসামী বাপ্পিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আরও চারজনকে আটক করা হয়েছে। উত্তেজিত জনতা বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
কুমিল্লা প্রতিনিধি, মাছুম কামাল।