নগরীর বাকলিয়া থানাধীন কল্পলোক আবাসিক এলাকায় পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে মো. সাইফুল (২৮) নামে এক যুবক নিহত হয়েছে। খুন হওয়া এইচ এম লোকমান হোসেন রণি হত্যা মামলার প্রধান আসামি এই সাইফুল। তিনি একটি কিশোর গ্রুপের কাছে ‘বড় ভাই’ নামে পরিচিত।
মঙ্গলবার ভোররাত ৪টার দিকে নগরীর বাকলিয়া থানার খালপাড় কবরস্থান এলাকায় এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে বলে জানান বাকলিয়া থানার ওসি প্রণব চৌধুরী।
পুলিশ সূত্র জানায়, খালপাড় ফুলতলা এলাকার কিশোর অনিকের সঙ্গে স্থানীয় এক কিশোরীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এর মধ্যে গোলপাহাড় এলাকার কিশোর শ্রাবণের সঙ্গে ওই কিশোরীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এ কারণে মেয়েটি অনিককে এড়িয়ে চলা শুরু করলে সে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে।
গত ৬ এপ্রিল রাতে শ্রাবণের বন্ধু জয় গোলপাহাড় থেকে ফুলতলা এলাকায় গেলে অনিক ও তার বন্ধুরা তাকে আটকে রেখে মারধর করে। এক ফাঁকে জয় এলাকার ‘বড় ভাই’ হিসেবে লোকমানকে ফোন করে। রাত সাড়ে ১১টার দিকে তখন লোকমান ও কয়েকজন বন্ধু মিলে নগরের গোলপাহাড় এলাকায় আড্ডা দিচ্ছিলেন। এলাকার ছোট ভাই জয়ের ফোন পেয়ে ঘটনা কি হয়েছে জানতে লোকমানসহ দুইটি মোটরসাইকেলে করে ছয়জন বাকলিয়া খালপাড় ফুলতলা এলাকায় যায়। যারা তাকে আটকে রেখেছে তাদের সঙ্গে কথা বলেন তারা।
এসময় হঠাৎ করে দুইতলা একটি বাড়ির ছাদ থেকে ৭-৮ রাউন্ড গুলি ছোঁড়েন সাইফুল। লোকমানের মাথায় গুলি লাগলে তাকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে রাত একটার দিকে লোকমানকে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় সাইফুলকে প্রধান আসামি করে মামলা হয় বাকলিয়া থানায়। লোকমান ও সাইফুল দুজনই নিজ নিজ এলাকায় যুবলীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত ছিল। তারা এলাকায় কিশোরদের গ্রুপ নিয়ন্ত্রণ করত।
বাকলিয়া থানার ওসি প্রনব চৌধুরী বলেন, সোমবার রাতে ফটিকছড়ি উপজেলার জাফতনগর গ্রামে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় মামলার প্রধান আসামি সাইফুল এবং তিন নম্বর আসামি জিয়াউদ্দিন বাবলুকে গ্রেফতার করা হয়।
থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে সাইফুলের স্বীকারোক্তি মতে অস্ত্র উদ্ধারের জন্য কল্পলোক আবাসিক এলাকার খালপাড় কবরস্থান এলাকায় গেলে কয়েকজন সন্ত্রাসী তাকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এসময় উভয়পক্ষে গোলাগুলির একপর্যায়ে সন্ত্রাসীরা পিছু হটে। তখনই ঘটনাস্থলে সাইফুলকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায় বলে দাবি ওসি’র।
ওসি জানান, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সাইফুলকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনাস্থল থেকে একটি এলজি এবং দুই রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করা হয়েছে।
গোলাগুলিতে বাকলিয়া থানার এসআই কারিমুজ্জামান ও এএসআই আলমগীর আহত হয়েছেন বলেও জানিয়েছেন ওসি